সুপ্তা চৌধুরী।
ভার্চ্যুয়াল আড্ডায় সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুক অন্যতম।বহু ব্যাচম্যাটরা ফেসবুকে গ্রুপ তৈরির মাধ্যমে নিজেদের বন্ধুত্বকে দৃঢ় করার চেষ্টা করেছে।তার মধ্যে এসএসসি ০২–এইচএসসি ০৪ ব্যাচের গ্রুপটি অন্যতম। ২০১২ সালে এর গোড়াপত্তন।
এই গ্রুপের অ্যাডমিনদের একজন জাকারিয়া নাহিদ বললেন, ‘স্কুল–কলেজের বন্ধুদের অনেকের সঙ্গেই একটা সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন অনেকেই হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের খুঁজে বের করছে, তখন সারা দেশের বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হতেই গ্রুপটির শুরু। এখন প্রায় ৪০ হাজার সদস্যের বিশাল প্ল্যাটফর্ম এটি।
আরেকজন এডমিন মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন,আমরা স্কুল কলেজ এর বন্ধুরা একসাথে থাকার জন্যই মূলত গ্রুপটি খোলা হয় ২০১২ সালে। এর পর টুকটাক আড্ডা, আর পরিচিত কিছু বন্ধুর মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। হঠাৎ ২০১৭ সালে এটি নতুন মাত্রা পায়। বড় একটি গেট টু গেদার এর আয়োজন করা হয় ঢাকায়। আর এর পর থেকেই ভাবনা আসে, সমাজের জন্য আমাদের কিছু করার আছে। এরপর থেকেই চলছে গুটি গুটি পায়ে পথ চলা, নিজেদের পাশাপাশি সমাজেও কিছু অবদান রাখার চেষ্টা সম্মিলিত ভাবে। যেহেতু শুরুতে শুধু আড্ডা বা যোগাযোগ রক্ষার জন্যই তৈরি হয়েছিল গ্রুপটি আর এখন এটি অকল্পনীয় মাত্রা পেয়েছে তাই একজন এডমিন হিসেবে বলবো, আমরা শুধু সফলই না, আমরা পেয়েছি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি।
ভবিষ্যতে আর কি প্লান আছে গ্রুপ নিয়ে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,ভবিষ্যতে আমাদের একটি ফাউন্ডেশন করার পরিকল্পনা আছে, যার কাজ খুব দ্রুত এগিয়ে চলছে। ফাউন্ডেশন এর লক্ষ্য হবে আমাদের বন্ধু এবং তাদের পরিবারের উন্নয়নে পাশে থাকা। এছাড়া সামাজিক দায় বদ্ধতা থেকে দেশের যেকোনো প্রয়োজনে কাজ করা। এবং সব কিছু ঠিক থাকলে একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল এবং স্কুল প্রতিষ্ঠা করা।
এছাড়া,অসহায় শিশুদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দিচ্ছেন এসএসসি ০২–এইচএসসি ০৪ ব্যাচের সদস্যরা।
বন্ধুত্বের শক্তিবিশাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে তাঁরা লাগাচ্ছেন নানান ইতিবাচক কাজে। বেকার বন্ধু বা স্বজনদের চাকরির ব্যবস্থা করা, বিনা মূল্যে জরুরি রক্তের প্রয়োজনে ছুটে যাওয়া, প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেশের বাইরে থেকে নিয়ে বা দিয়ে আসার কাজটি সহজেই হয়ে যাচ্ছে গ্রুপ পোস্টের মাধ্যমে। দল বেঁধে আবার বেরিয়ে পড়ছেন ভ্রমণে; বনভোজন, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কনসার্ট, ইফতার পার্টি বা পিঠা ও ফল উৎসবের মতো আয়োজনও হচ্ছে নিয়মিত। গত তিনটি ঈদের আগে এসএসসি ০২–এইচএসসি ০৪ গ্রুপের সদস্যরা দেশজুড়ে পথশিশুদের নতুন জামা উপহার দেওয়ার জন্য ‘সাইলেন্ট স্মাইল’ নামের এক চমৎকার আয়োজন করেছেন। এবারও করছেন।এছাড়া বন্যার্তদের সেবা, শীতবস্ত্র প্রদান প্রভৃতি সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে চলেছে এই এক ঝাঁক তরুন তরুনী। কেবল দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আরব আমিরাতের বন্ধুরা স্বেচ্ছায় রক্তদানও করেছেন।
তারা ০২-০৪ ব্লাড ব্যাংক নামে উপগ্রুপ হিসেবে পাশাপাশি একটি বিনামূল্যে রক্তদান সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে যাচ্ছে।
এভাবেই বন্ধুত্বের জয়গান নিয়ে এগিয়ে চলছে গ্রুপটি।