রেজি: নং - আবেদিত ২০১৬খ্রিঃ, প্রতিষ্ঠাকাল: ১মার্চ ২০১৪                       বুধবার,  ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,  ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,  বিকাল ৩:১৬

গণধর্ষনের পর কিশোরীর আত্মহত্যা,ধর্ষণের মামলা নেয়নি পুলিশ।

July 28, 2021 , 2:36 pm

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জের সখিপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় সুমাইয়া(১৩) হেফজ শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রী। এরপর অপমান সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। পাশাপাশি আত্মহত্যার মামলা নিলেও, ধর্ষণের মামলা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ওই ছাত্রী গত রবিবার ( ১১জুলাই) রাতে দুই বখাটে কর্তৃক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে অপমান সইতে না পেরে মঙ্গলবার(১৩জুলাই)বিকেলে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার ডিএমখালী ইউনিয়নের মোল্লা কান্দি নিজ বাড়িতে গলায় দড়ি বেঁধে আত্মহত্যা করে।

ভুক্তভোগী ওই কিশোরী উক্ত এলাকার লেবানন প্রবাসী শাহেনসা খানের মেয়ে। ডিএমখালি আজি জিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্রী।

এ ঘটনায় নিহত মাদ্রাসাছাত্রীর মা ফেরদৌসী ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার ডিএমখালি ইউনিয়নের আজিজ হাওলাদারের ছেলে কাদের হাওলাদার(কাজল) ও কামাল সরদারের ছেলে নিক্সন সরদারকে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ মামলা নেয়নি।

মাদ্রাসাছাত্রীর মা বলেন, আমার মেয়ে সুমাইয়া মাদ্রাসা যাওয়ার পথে কাদের ও তার বন্ধু নিক্সন প্রায় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতো কিন্তু সুমাইয়া না করে দিয়েছিলো। কিন্তু কাদের তা না শুনে উৎত্যাক্ত করতেই থাকতো। এক সময় কাদেরর প্রেমে রাজি হয় সুমাইয়া। আমি জানতে পেরে কাদেরকে ডেকে এনে বুজিয়ে বলি তোমরা যেহেতু দুই জন,দুই জনকে পছন্দ করো সেহেতু সুমাইয়া এখনো ছোট প্রাপ্ত বয়স হলে আমি তোমার কাছে সুমাইয়াকে বিয়ে দিবো।

কাদেরর বন্ধু নিক্সনের ঘর আমাদের ঘর একই বাড়িতে হওয়ার কারোনে কাদের নিক্সনের বাসায় এসে প্রায় সুমাইয়ার সাথে দেখা করতো। একইভাবে (১১ জুলাই) নিক্সনের বাবা- মা বেড়াতে গেলে। নিক্সনের ঘর ফাঁকা পেয়ে রাতে কাদের সুমাইয়াকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দুইজনে মিলে ধর্ষন করে।
আমার হটাৎ ঘুম ভেঙে যায় সুমাইয়ার চিৎকারে। আমি তাৎখনিক গেলে কাদের ও নিক্সন পালিয়ে যায়।এবং ধর্ষণের সময় ভিডিও ধারণ করে। পরে নিক্সনের পরিবার আমার মেয়েকে তাদের ঘরে গেছে কেন তাই গালামন্দ করে। আমার মেয়ে ধর্ষনের অপমান সইতে না পারায় (১৩ জুলাই) বিকেলে আমি বাজারে গেলে ঘর ফাঁকা পেয়ে গলায় দড়ি বেঁধে আত্মহত্যা করে। পরে সখিপুর থানায় কাদের ও নিক্সনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেই কিন্তু এখনো কোন মামলা হয় নাই।

অভিযুক্ত নিক্সনের মা লাকি বলেন, সেই রাতে আমরা বাসায় ছিলাম না, আমার ছেলে তার বন্ধু বান্ধব নিয়ে রাতে ফুটবল খেলা দেখার কথা ছিলো। কিন্তু তার পর কি হয়েছে আমি তা জানি না

ডিএমখালি ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন হক আবু বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি সুমাইয়া নামক এক মাদ্রাসা ছাত্রী তার মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় দড়ি বেঁধে আত্মহত্যা করেছে। আমি ঘটনা শুনতে পেরে তাৎক্ষণিক ভেদরগঞ্জ হাসপাতালে ছুটে যাই। পরবর্তী সখিপুর থানার পুলিশের সাথে মিলে পোস্ট মর্টেমের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠাই।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়ে জানানো হলেও এ ঘটনায় সখিপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে সখিপুর থানা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান হাং বলেন, মেয়েটি মোবাইলে ফোনে কথা বলতো ঠিকমতো পড়াশোনা করতে না তাই তার মা বকাঝকা করছে। তাই তার মায়ের সাথে অভিমান আত্মহত্যা করেছে। ধর্ষণের কোন অভিযোগ আমাদের কাছে দেওয়া হয় নাই।অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে।সেই পরিপেক্ষিতে সুরতহাল আমরা সেই ভাবে করে করে পোস্ট মর্টেমের জন্য পাঠাই।

Total View: 1492