রেজি: নং - আবেদিত ২০১৬খ্রিঃ, প্রতিষ্ঠাকাল: ১মার্চ ২০১৪                       বুধবার,  ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,  ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,  দুপুর ২:১৪

ঘটনার সময় হজ্বে তবুও যুবদল নেতা নড়িয়া থানার মামলার আসামি

June 15, 2023 , 7:48 am

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: গত বছরে শরীয়তপুরের একটি মামলায় মতিউর রহমান সাগর নামের এক বিএনপি নেতা কে সন্দেহভাজন দেখিয়ে আটক করে অদালতে চালান করেন নড়িয়া থানা।পরবর্তীতে অন্যদের সাথে চার্জশিটে আসামি করা হয় তাকে । মামলার বাদী আসামিকে চিনেন না ও তার নাম এজাহারেও উল্লেখ করেন নাই। তবুও তিনি আসামি

কিন্তু বিএনপি নেতা মতিউর রহমান সাগরের দাবী, ওই মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করা ঘটনার তারিখের ২ দিন আগের থেকে তিনি সৌদি আরবে ওমরাহ হজ্বে অবস্থানরত ছিলেন তিনি ।ওই মামলার এজাহার তাকে কোন আসামি করা হয় নাই। তিনি নড়িয়া উপজেলার যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঘরিষার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২ বার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হওয়ার কারনে ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরীয়তপুর সিআইডির উপ- পরির্শক মজিবুর রহমান তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়।ওই সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করার জন্য ঢাকায় তার অফিসে গেলে তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ২ লাখ টাকা ও দাবী করেন বলে জানান সমকালকে।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়,ওই মামলার বাদী আরিফ ঢালীর কাছে গত বছরের ১৫ মার্চ একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে তখন তার ভাই বশিউর ঢালির গলার শব্দ শুনতে পান। তখন তিনি বলেন কিছু লোক আমাকে বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে আমাকে লিভিয়া নিয়ে আসছে। আমাকে তারা এখন মারধোর করেছে, আমাকে বাচাতে চাইলে কিশোরগঞ্জে ভৈরবের আনোয়ারা খাতুনের ব্যাংক একাউন্টে ৩ লাখ টাকা পাঠাতে। আমি ২১ মার্চ ওই একাউন্টে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা পাঠাই।
পরবর্তী ১ এপ্রিল আবারো তার ভাই ফোন করে বলে ওই আনোয়ারা খাতুনের একাউন্ট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে তা না হলে তারা আমার ভাইকে বাচতে দেবেনা। আমি ৫ এপ্রিল ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার রয়েল হোস্টেলের সামনে আনোয়ারা খাতুনের কাছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই।
তার কিছুদিন পর ১৭ এপ্রিল লিবিয়ায় বসবাসরত আমার চাচাতো ভাই ফোন করে বলে আমার ভাইর লাশ তার বাসার সামনে পাওয়া গেছে ।
পরবর্তীতে ২১ এপ্রিল শরীয়তপুর মানব পাচার দমন ট্রাইবুনালে আনোয়ারা খাতুন সহ আরোম৫/৬ জনকে অঙাত করে মামলা দায়ের করেন।ওই মামলা এফআইআর করে পাঠান নড়িয়া থানায়। ২৫ এপ্রিল মতিউর রহমান সাগরে গ্রেফতার করে নড়িয়া থানার তদন্ত ওসি আবির হোসেন।পরে ওই মামলার তদন্ত দায়িত্ব পান সিআইডি

মামলার চার্জশিটে তদন্তকারি কর্মকর্তা উল্লেখ করেন,এই মামলার বাদী লিবিয়া বসবাসরত আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলে ঢাকার যাত্রাবাড়ী রয়েল হোস্টেলের সামনে হাজতি আসামি মতিউর রহমান সাগর ও এই মামলার মূলহোতা আনোয়ার হোসেনের ভগ্নিপতি নিজাম মিয়ার কাছে ৪লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়।

এই মামলার আসামী মতিউর রহমান সাগর জানান,আমি নড়িয়া উপজেলা যুবদলের সি: যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও বিএনপি মনোনীত সাবেক ২ বার চেয়ারম্যান প্রার্থী। গত বছরের ২৫ মে নড়িয়া থানার ওসি তদন্ত আবীর থানার একটি পেন্ডিং মামলায় সন্ধেহভাজন ভাবে আমাকে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করেন। পরে চিফজুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট জামিন না মন্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। ৯দিন জেল হাজতের পরে বাদী নিজে কোর্টে উপস্তিত হয়ে লিখিত ভাবে জানান মতিউর রহমান সাগরকে আমি চিনেন না এবং তাদের মামলার এজাহার ভুক্ত আসামীও না তাকে জামিন বা খালাশ দিলে তাদের কোন আপত্তি নাই। তার কথা শুনে আদালত তাকে জামিনে মুক্তি দেয় এরপর নিয়মিত হাজিরা দিতে থাকেন হঠাৎ করে উক্ত মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান শরিয়তপুর সিআইডির উপ-পরিদর্শক মজিবুর রহমান তিনি তদন্তের জন্য মতিউর রহমান সাগরের অফিস সাগর ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নয়াপল্টন ঢাকা গিয়ে বলেন দুই লাখ টাকা দাবি করেন তাহলে চার্জশিটে তার নাম অন্তরভুক্ত করবেনা।

তিনি আরো বলেন আমি উক্ত মামলায় নির্দোষ এজাহারে আমার নাম নাই এবং ঘটনার দিন আমি সৌদী আরব ছিলাম আমি কোন টাকা দিতে পারবোনা বলেই চার্জশিটে অভিযুক্ত করেন। কিশরগন্জের ভৈরব থানার অন্য দুই আসামিকে ৫ এপ্রিল বিকালে যাত্রাবাড়ী সাড়ে চার লাখ টাকা দেয় সেখানে আমি উপস্তিত ছিলাম এজাহারে কোথাও লিখা নাই বাদী নিজেও বলেন আমি এই মামলায় কোন প্রকারে জরিত না এবং আগে পরে কখনো তাকে চিনেও না এবং এই মামলার অপর তিনজন আসামী আনোয়ারা বেগম,ও তাহার ছেলে আনোয়ার হোসেন,ও মেয়ের জামাই নিজাম তিনজনের বাড়ীই কিশরগন্জ ভৈরব তারাও আমাকে চিনেনা কোন দিন দেখেননি অথচ রাজনৈতিক হিংসার কারনে হোক বা টাকার জন্য হোক , ৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে যাত্রাবাড়ীর ঘটনা দেখিয়ে চার্জশিট দিলেন অথচ আমি ৩ এপ্রিল রাত ১ অর্থাৎ ৪ এপ্রিল ভোর থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদী আরব ছিলাম।

মামলার বাদী আরিফ ঢালী বলেন, আমি মামলা দিছি আনোয়ারা খাতুনের নামে। তার ছেলে আনোয়ার হোসেন লিবিয়া আমার ভাইকে জিম্মি করে তার মার কাছে টাকা নিছে। তাই তার মাকে দিছি৷ আমি মতিউর রহমান সাগরকে কখনো দেখি নাই ও চিনিও না তার নামে কোথাও অভিযোগ ও করি নাই তাকে কেমো এই মামলা তার নাম আনা হলে আমি কিছুই জানিনা।

নড়িয়া থানার ওসি তদন্ত আবির হোসেন বলেন,আন্তর্জাতিক মানব পাচারের সন্দেহ জনক ভাবে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়েছি। এই মামলা তদন্ত করছে সিআইডি আপনারা সিআইডির কাছ থেকে জানেন সে জড়িত আছে কি না।

সিআইডির উপ পরিদর্শক মজিবুর রহমান বলেন,তাকে নড়িয়া থানা কেনো গ্রেফতার করছে তা আমি জানি না। আমার সিনিয়র অফিসার ডিআইজির নির্দেশনা আছে তার নাম বাদ দেওয়া যাবে না।তাই এই মামলায় এজাহারে মতিউর রহমান সাগরের নাম না থাকলে সঙ্গবদ্ধ অপরাধের কারনে চার্জশিটে তাকে আসামি করা হয়েছে। টাকার বিষয়ে তিনি বলেন তার কাছে কোন টাকা চাই নাই টাকা নিলেতো তার নাম বাদ দিয়ে দিতাম।

Total View: 659