শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আল আমিনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বহস্পতিবার দুপুরে জাজিরা মডেল থানার সম্প্রসারিত নতুন ভবনের একটি কক্ষে ফাস লাগানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে ঢাকা থেকে আসা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির ফরেনসিক টিম সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে গেছে।
মৃত ওসি আল–আমিনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ওসি আল–আমিন গত দুই বছর ধরে বিষণ্নতায় (ডিপ্রেশন) ভুগছিলেন বলে পরিবারের বরাতে নিশ্চিত করেছেন শরীয়তপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ শরীফউজ্জামান।
থানা সূত্রে জানা যায়, ওসি আল-আমিন বরিশাল জেলার মূলাদি থানার কোচির চর গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেন ছেলে। ২০০৭ সালে পুলিশ বিভাগে জয়েন করেন। তিনি গত ১৪ সেপ্টেম্বর জাজিরা থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন।
সেখানে চারতলা একটি ভবনে থানার কার্যক্রম চলছে। ওই ভবনের একটি কক্ষে থাকতেন ওসি আল–আমিন।
সকালে অফিসে যেতে দেরি হলে জাজিরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আঃ ছালাম থানার দ্বিতীয় তলার রুম (পদ্মায়) যান। সেখানে গিয়ে তিনি রুমের দরজা লক খোলা অবস্থায় পান। আর তার দরজা ভিড়ানো অবস্থায় ছিলো।
পরে রুমে ঢুকে রুমের উত্তর পাশে জানালার গ্রিলের সাথে তার মরদেহ গলায় গামছা পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সংবাদ পেয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার শরীয়তপুর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন অর্থ, ডিআই ওয়ান শরীয়তপুর, ওসি ডিবি শরীয়তপুর, দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জাজিরা উপজেলার ইউএনও এসিল্যান্ড ওজাজিরা হাসপাতালের টি এইচ ও আরএমও কে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন
শরীয়তপুর পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক, ডাক্তার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা দুপুরে খবর পাই। জাজিরা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মরদেহ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
থানার নতুন ভবনের ২য় তলায় ইন্সপেকশন বাংলো (পদ্মা) রুমে ঘুমাতেন। তার মরদেহ সেই রুমেই পাওয়া গেছে। গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় তার মরদেহ তার রুমের জানালার গ্রীলের সাথে ঝুলছিল।
তিনি যে রুমে ঘুমাতেন তার মরদেহ সেই রুমেই পাওয়া গেছে। গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় তার মরদেহ তার রুমের জানালার গ্রীলের সাথে ঝুলছিল।
এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এখন বলা সম্ভব না। পোস্টমর্টেমের পর বিস্তারিত কারন বলতে পারব।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন অর্থ শেখ শরিফুজ্জামান জানান,ওসির পরিববার সহ সকলের উপস্থিতিতে সিআইডির ফরেনসিক টিম লাশ নামান,পরে আমরা সুরতহাল করি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি সে আত্মহত্যা করছে। পোস্টমর্টেমের পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো। পরিবার জানিয়েছে তিনি গত ২ বছর যাবৎ ডিপ্রেশনের ওষুধ খেতেন। আমরা সেই ঔষধ গুলোও দেখে প্রমাণ পেয়েছি। তাকে এখন পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলার পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, দুপুরে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল-আমিনের মরদেহ জানালার গ্রিলের সাথে ঝুলতে দেখেন সহকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছাাই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে ঘটনার আসল কারণ জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পরে বাকিটা নিশ্চিত হওয়া যাবে।