হাতের মেহেদী না মুছতেই যৌতুক লোভি স্বামী প্রতারনা করে ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে তালাক দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। লিজা সদর উপজেলার স্বর্ণ ঘোষ এলাকার লিয়াকত আলী খান এর মেয়ে। লিজা ছোট থাকতেই বাবা মার বিচ্ছেদ ঘটে। মেয়েকে ফেলে মা, বাবা দু’ জনে যার যার মতো সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তখন থেকেই লিজা স্বর্ণ ঘোষ মামার বাড়ি থেকে রাজগঞ্জ এতিমখানা ও মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে বড় হয়। ভালো শিক্ষার্থী হওয়ায় শরীয়তপুর সরকারী কলেজে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ক্লাস করতো। লিজার উপর নজর পরে যায় একই কলেজের ছাত্র মাসুম শেখের। বখাটে মাসুম শেখের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভালবাসার সম্পর্কে বেঁধে ফেলেন লিজা কে। মাসুম শেখ পালং উপজেলার কোয়ারপুর গ্রামের আঃ জব্বার শেখের ছেলে। কিছু দিন পর উভয় পক্ষের অভিভাবকের সম্মতিক্রমে গত ৪ এপ্রিল ২০১৬ তে বিয়ে হয় দু’জনের। প্রথমে কিছু দিন সুখে শান্তিতে সংসার করার পর শুরু হয় যৌতুকের জন্য চাপ দেয়া ও শারীরিক নির্যাতন। লিজা অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের মেহেদী না শুকাতেই যৌতুক লোভী স্বামী মামার কাছে ব্যবসার করার জন্য ১ লাখ টাকা চায়। আমার মামা গরিব টাকা দিতে অস্বীকার করায়। বিগত ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ তে আমার শাশুড়ি সহ কতেক লোক জনের সহযোগীতায় আমার উপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন করে। আমি গুরুত্বর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। পরবর্তীতে ৫ এপ্রিল ২০১৭ তে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করি। উক্ত মামলার আসামী বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয় এবং দেলোয়ার হোসেন,নিকাহ্ রেজিস্টার ও কাজী ডোমসার ইউনিয়ন পালং শরীয়তপুর কাজী অফিসের মাধ্যম আব্বাস শরিফ গত ২০.১২.১৬ তে স্বাক্ষি হিসাবে সাক্ষর করিয়া আমাকে তালাক দিয়েছে এই মর্মে কাগজ প্রদর্শন করে জামিন লাভ করে। প্রকৃতপক্ষে আমি এই তালাকের ব্যাপারে কিছু যানি না। স্বাক্ষি যারা দিয়েছে তাদেরকে ও আমি চিনি না। উল্ল্যেক্ষ বিয়ের কিছু দিন পর থেকে আমি বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তুলে দিতাম। এক দিন ২ নং বিবাদী দেলোয়ার হোসেন (কাজী) এনজিওর অফিসার সেজে আমার স্বামীর বাড়ি এসে প্রতারণা মূলক ভাবে সদস্য হওয়ার জন্য কিছু সাদা কাগজে দু’টি সাক্ষর নেন। আমার ধরণা ওই দু’টি স্বাক্ষর জ্বাল করে একে অপরের সাথে যোগসাজশে ভুয়া তালাক নামা বানিয়েছে। বর্তমান ১নং আসামী মাসুম শেখ মোবাইল ফোনে খুন করার হুমকী দেয় এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমার ছবি ছেড়ে দিয়ে মান সম্মান ক্ষুন্ন করবে বলে জানায়। এ ঘটনায় আমি হতবিহবল হয়ে পড়ি। ভয়ে কলেজে যেতে পারি না। এখন সে অন্য এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আর কোন নারী যাতে আমার মত যৌতুকের জন্য নির্যাতন হতে না হয়। আর এই অপকর্মের সহযোগী কাজী দেলোয়ার হোসেন। সুন্নতি লেবাস লাগিয়ে টাকার বিনিময়ে এই অপকর্ম গুলো করেন তিনি। সদর উপজেলার ডোমসার বাজারে দেলোয়ার কাজীর চেম্বারে এ বিষয়ে জানতে গেলে তিনি হাটে হাঁড়ি ভাঙ্গার ভয়ে সাংবাদিক কে ম্যানেজ করার জন্য বাজারের পাশে নিটালায় নিয়ে যায়। প্রশ্ন করলে কোন উত্তর দিতে পারেনি। যৌতুক লোভী স্বামী লিজাকে মেরে ফেলার হুমকী দিলে,লিজা আইনের সাহায্য পাওয়ার জন্য পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। আজ ২৬ এপ্রিল উভয় পক্ষকে নিয়ে শরীয়তপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বসেছেন মিমাংশার জন্য।
ডোমসারে ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে তালাক দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতারক স্বামী মাছুম শেখের বিরুদ্ধে
April 26, 2017 , 4:28 pm