তৃতীয় স্প্যান বসনোর মধ্যদিয়ে পদ্মাসেতুর কাজ আরো একধাপ এগিয়ে গেল। দ্বিতীয় স্প্যানের পর রোববার (১১ মার্চ) সকাল ৯টায় শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর ৩২’শ মেট্রিকটন ওজনের এই সুপার স্ট্রাকচারটি বসানো হয়েছে। তৃতীয় স্প্যানটি বসানোর মদ্যদিয়ে পদ্মা সেতুর ৪৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো । সেতু কর্তৃপÿ জানায় চতুর্থ স্প্যানটিও স্থাপনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
গত শনিবার রাতে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে তৃতীয় স্প্যানটি তিয়ান-ই ক্রেন মুন্সীগঞ্জের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে জাজিরা প্রান্তে নিয়ে আসে। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ক্রেন দিয়ে ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির ওপরে স্প্যানটি তোলার কাজ শুরু হয়। এর পর বিভিন্ন পরীÿা নিরীÿা আর প্রস্তুতি শেষে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্প্যানটি পুরোপুরি খুঁটির ওপর স্থাপন করা হয়।
সেতু বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈঘ্য পদ্মা সেতুতে ৪২টি পিলার থাকবে। প্রতিটি পিলারের নিচে ৬টি করে পাইল বসানো হচ্ছে। মোট ২৪০টি পাইল বসানো হবে। পাইল গুলো ৯৬ মিটার থেকে ১২৮ মিটার পর্যন্ত মাটির গভীরে বসানো হচ্ছে।
পদ্মার দুই পাড়ে (জাজিরা-মাওয়া) টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। দ্বিতল বিশিষ্ট এই সেতুর নিচ দিয়ে চলবে রেল গাড়ি আর উপর দিয়ে যাতায়াত করবে যান ও পন্যবাহি পরিবহন। পানির স্তর থেকে ৬০ ফিট উঁচু হবে মূল সেতু। সেতুর প্রস্থ্য হবে ৭২ ফিট বা ৪ লেন। চার হাজারেরও বেশী দেশী-বিদেশী জনবল দিন-রাত করে সেতু নির্মানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের মধ্যে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান এবং চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের উপর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো হয়। ইতোমধ্যে ৪১নং পিলারের কাজ ও প্রায় শেষ হয়েছে।
পদ্মাপাড়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের বাপ-দাদার ভিটে মাটি হারিয়েও কোন দুঃখ নেই। তৃতীয় স্পেনটি বসানোর ফলে পদ্মাসেতুর কাজ আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। এতে মনে হচ্ছে পদ্মাসেতু আমাদের কাছে আর স্বপ্ন নয়। বাস্তবেই সেতু নির্মাণ করা হবে। এ সেতু নির্মিত হলে আমাদের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতি হবে।
চায়না মেজরব্রীজ কোম্পানীর সাইড প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বলেন, রোববার সকালে পদ্মা সেতুর তৃতীয় স্পেনটি বসানো হয়েছে। ৪১নং পিলারের কাজ প্রায় শেষের পথে। এ পিলারের কাজ শেষ হলেই আরো একটি স্পেন বসানো হবে। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুরো স্পেন বসানোর কাজ শেষ করে পদ্মাসেতু পুরো দৃশ্যমান করে তুলতে পারবো।