স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুপ্তা চৌধুরী
বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবাই যখন নিজ নিজ পরিবারের সঙ্গে ঘরে থাকছেন, ঠিক তখনই স্রোতের বিপরীতে হাঁটছেন বেশ কিছু মানুষ।
তারা এই কঠিন সময়ে পরিবারের সঙ্গে না থেকে দেশের তথা দশের সেবা করার প্রত্যয়ে এগিয়ে এসে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবক রূপে। তেমনি দুজন মানুষ হলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব ও পর্যটন বিশেষজ্ঞ হাসান শাহীদ বাবু এবং মীর সিটি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মোশারেফ অমি।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তর যুব ও স্বেচ্ছাসেবক বিভাগের সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে স্বেচ্ছায় করোনা বিস্তার প্রতিরোধে দীর্ঘ এক মাস ধরে এক ঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির যুব ও স্বেচ্ছাসেবক বিভাগের পরিচালক জনাব ইমাম জাফর সিকদারের নেতৃত্বে এবং যুব প্রধান মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধায়নে এক ঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবক নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তাদের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে সচিবালয়ে ত্রান ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়,আইইডিসিআর,স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত সরকারি হাসপাতাল সমূহ সিআইডি,ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এর সকল থানা এবং পুলিশ কমিশনার এর কার্যালয়,শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর স্থানসমূহ ডিজইনফেকটিং এর কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
এছাড়াও কল সেন্টারের মাধ্যমে মনো-সামাজিক সহায়তা পেতে কাজ করছে। স্বেচ্ছাসেবকরা নিজ খরচে নিজেদের হাতে রান্না করা খাবার প্রতিদিন দুঃস্থদের মাঝেও বিতরণ করছে।
এই বিষয়ে নাট্য ব্যক্তিত্ব ও পর্যটন বিশেষজ্ঞ হাসান শাহীদ বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের এই দূর্যোগময় মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘ একমাস পরিবার এবং নিজস্ব সকল ব্যক্তিগত কার্যক্রম থেকে দূরে থেকে তরুণ প্রজন্মের স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে এই মহৎ কাজে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি গর্বিত।
রেডক্রিসেন্ট এর সঙ্গে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে তিনি বলেন ১৯৭৭ সাল থেকে জুনিয়র রেডক্রস এর কার্যক্রম এর সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করি পরবর্তীতে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির অধীনে যুব রেডক্রিসেন্টে স্বেচ্ছাসেবক বিভাগে যুক্ত হই।এখন সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জড়িত আছি।
মীর সিটি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মোশারেফ অমির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল এ মহূর্তে তার পরিবার সন্তানসম্ভাবা এবং ভোলা জেলার চরফ্যাশনে অবস্থান করছে, সন্তানসম্ভাবা স্ত্রীর পাশে না থেকে তিনি দীর্ঘ একমাস অবস্থান করছেন জাতীয় সদর দপ্তর যুব রেডক্রিসেন্ট অফিসে। তাঁবুতে থেকে দেশের সংকটকালীন পরিস্থিতিতে তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে যখন সবাই ঘরে অবস্থান করছে তখন এই তরুণ উদ্যোক্তা সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন দেশের জন্য।
এছাড়াও তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ৭৭ জন মধ্যবিত্ত পরিবারকে নীরবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।মীর মোশারেফ অমি পেশায় ব্যবসায়ী, যুক্ত আছেন পিউর ড্রপ কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান হিসেবে এবং মীর সিটি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। ব্যবসায়ী হলেও তিনি নিজেকে একজন স্বেচ্ছাসেবক, সমাজকর্মী এবং সংগঠক হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন।