শরীয়তপুর প্রতিনিধি॥
সম্পত্তির লোভে শরীয়তপুর পৌরসভার চর পালং গ্রামের এসকান্দার বেপারী (৪২) কে গত ২০১৩ সালে বিষ পানে হত্যা করা হয়। মামলার ভয়ে ৩ সেপ্টেম্বর সোমবার সেই লাশের কঙ্কাল চুরির করা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ এসকান্দার বেপারীর মা মোসাম্মদ নুর জাহান বেগমের।
মোসাম্মদ নুর জাহান বেগম বলেন, শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম খান, স্ত্রী মনি বেগম, সদর উপজেলা সুজনদোয়াল গ্রামের বিউটি বেগম, স্বামী আলমাছ সরদার জমির লোভে আমার ছেলেকে বিষ পান করিয়ে হত্যা করে। পরে আমার বসত বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে এসকান্দারের লাশ দাফন করি। কিন্তু ভয়ে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি। এখন আমাকেও মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছে তাই ওদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবো। আবুল কাশেম খানগংরা মামলার ভয়ে কবরস্থান থেকে আমার ছেলের কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে। কারণ লাশের হাড়ের ভিসার রিপোর্ট হলে তারা ফেঁসে যাবে।
স্থানীয় ছাত্তার বেপারী ও জুলেখাসহ অনেকেই জানান, এসকান্দার বেপারী মৃত্যুর আগে বিউটি বেগমকে বিয়ে করে। বিয়ের আড়াই বছর পর একান্দারকে ছেড়ে সুজনদোয়াল গ্রামের বাসিন্দা আলমাছ সরদারকে আবার বিয়ে করে বিউটি বেগম। বিউটি ও এসকান্দার বেপারীর কোন সন্তান ছিল না। এসকান্দার বেপারী মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে বিউটি বেগম চক্রান্ত করে তার আগের স্বামীর জমি (৬০ নং পালং মৌজার ৬ শতক জমি) জাল দলিল করে যোগসাজসে প্রতিবেশি চর পালং গ্রামের আবুল কাশেম খানগংদের কাছে বিক্রি করেন। সেই জমিতে এসকান্দার বেপারীসহ তার পরিবারের পাঁচজনের লাশ দাফন করা ছিল। জমিটি নিয়ে থানা ও কোর্টে একাধিক মামলাও চলছে।
মোসাম্মদ নুর জাহান বেগমের নাতনী মরিয়ম বিবি বলেন, আবুল কাশেম খান ও বিউটি বেগমগংরা জোর পূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার নানাদের জমি দখল করেছে। সেখানে একটি কবস্থান ছিল। সেই কবরে মামা এসকান্দার বেপারীর লাশ কবর দেয়া হয়েছিল। কবর খুঁড়ে লাশের কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে আবুল কাশেম খানগংরা । এখন সেই জমিতে জোর খাটিয়ে কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে তারা বিল্ডিং করার জন্য ইটের দেয়াল করছে।
সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম খান বলেন, ওই ৬ শতক জমি বিউটি বেগমগংদের কাছ থেকে আমি ক্রয় করেছি। সেই জমিতে কবরস্থান ছিল। তাই ঘর করার জন্য কবরস্থান ভেঙেছি। তবে লাশের কঙ্কাল চুরির বিষয়টি মিথ্যা, ভিত্তিহীন।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান,
যেই কবরস্থান ভাঙ্গা হয়েছে, সেই জমি কাশেমের ক্রয়কৃত । ওই সম্পত্তি নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ওখানে বিল্ডিং করা হবে শুনে আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কবরের লাশের কঙ্কাল চুরি হয়েছে এমন কোন ঘটনা শোনেন নাই বলে জানান ওসি।