সমীর চন্দ্র শীলঃ শত বাঁধা পেরিয়ে দারিদ্রতাকে চ্যালেন্জ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার এক সাহসী যুবকের নাম পলিন।তাকে চিনেনা শরীয়তপুর শহরে এমন লোক খুব কম আছে।মা,স্ত্রী, আর দুটি সন্তান নিয়ে পলিনের সংসার। পলিন এমন কোন কাজ নেই যে পারে না। মাটি কাটা,গাছ কাটা,রিকসা চালানো,ইটের ভাটায় কাজ করাসহ এলাকার অনেক কাজ করে মোটামুটি ভালই চলছিল পলিনের সংসার।এলাকায় কাজ একটু কম তাই সংসার চালানোর তাগিদে পলিন কাজ নিল ট্রাকে হেলপার হিসেবে।কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস এক নিমেসেই পলিনের সকল স্বপ্নকে ধুলিস্যাত করে দিল সড়ক দুর্ঘটনা।
প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে শরীয়তপুর থেকে যশোরে কাঁচামাল আনতে যাওয়ার সময় ঢাকা- বরিশাল মহাসড়কে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লাগে এতে পলিনের পা দুটি মারাত্বকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়।তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও ডাক্তার তার একটি পা বাঁচাতে পারে নি। তার ডান পা কেটে ফেলতে হয় আর বাম পায়ে অস্ত্রোপচার করে কোন রকম টিকিয়ে রাখা হয়।এতে মুহুর্তেই ভেঙ্গে যায় একটি কঠোর পরিশ্রমী ছেলের সমস্ত স্বপ্ন।মানুষের কাছে হাত পেতে কোনও রকম বেঁচে আছে পলিন।
হ্যা বলছি শরীয়তপুর জেলার সদর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ আটং গ্রামের পলিন ছৈয়ালের কথা।পলিন ছৈয়ালের পিতার নাম মৃত জলিল ছৈয়াল মাতা নূরজাহার বেগম।তাদের আদি নিবাস ছিল নড়িয়া উপজেলার লোনসিং গ্রামে ছৈয়াল বাড়ি।পলিনের জন্মের পর থেকেই দক্ষিণ আটং নানা বাড়িতে বাস করছে তারা।
দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করা পলিন ভিক্ষা করতে চায় না সে চায় স্থায়ী কর্মসংস্থান। এর আগে অনেকেই তাকে সাহায্য করেছে কিন্তুু স্থায়ী কর্মসংস্থান হয়নি পলিনের।
শরীয়তপুর জেলার সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক জনাব মাহমুদুল হোসাইন খান মহোদয় পলিনের কর্মসংস্থানের জন্য কিছু অর্থ দেন তা দিয়ে চায়ের দোকান করার জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার, চুলাসহ কিছু সরন্জাম ক্রয় করেন পলিন। এখন তার বড় প্রয়োজন একটি দোকান এবং দোকান বসানোর জন্য একটু যায়গা।তাই পলিন জেলা প্রশাসক মহোদয় সহ সকল উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ডিসি অফিসের আশে পাশে একটু যায়গা দেয়ার জন্য আকুতি জানিয়েছেন।
এদিকে পলিনের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন নিরাপদ সড়ক চাই ( নিসচা) শরীয়তপুর জেলা শাখা।
এমতাবস্থায় পলিনের কর্মসংস্থানের জন্য সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিবর্গ এবং প্রশাসনের সু- নজর পলিনকে একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবেন এমনটি আশা করছেন আত্বীয়স্বজন, এলাকাবাসী সহ সমাজের প্রতিটি ব্যাক্তি।