যৌতুকের বলি হলেন শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের পুটিয়া বড় তালুকদার বাড়ির লাল মিয়া তালুকদারের মেয়ে শান্তা আক্তার (৩২) নামের এক গৃহবধূ। সোমবার বিকেলে রামভদ্রপুর ইউনিয়নের চর কোড়ালতুলি গ্রামে শান্তার শশুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রাতে গৃহবধূ শান্তা আক্তারের মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়।
শান্তা আক্তারের বাবা লাল মিয়া তালুকদার জাগো নিউজকে জানান, ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের চর কোড়ালতুলি গ্রামের কালাম দেওয়ানের ছেলে মজিবর দেওয়ান (৪৫)’র সঙ্গে ১০ বছর আগে শান্তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকলোভী স্বামী মজিবর দেওয়ান শান্তাকে বাবার বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। আর এ বিষয় নিয়ে প্রায়ই মারধর করতে থাকে শান্তাকে। সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে মজিবর দেওয়ানের বাড়ি থেকে শান্তার বাবাকে ফোনে জানানো হয় শান্তা অসুস্থ তাড়াতাড়ি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে আসতে হবে। এ খবর পেয়ে শান্তার বাবা লাল মিয়া তালুকদার সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখেন মেয়ে শান্তার মরদেহ হাসপাতালের ট্রলিতে পড়ে আছেন। এ ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী মজিবর দেওয়ান, চাচাশশুর স্থানীয় মেম্বার লাল মিয়া দেওয়ান, জাল সাহানাজ বেগমসহ পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
স্থানীয় ওবায়দুর রহমানসহ অনেকেই বলেন, শান্তা খুব ভাল ছিল। যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় দা দিয়ে শান্তার ডান হাতে কয়েকটি কোপ দিয়েছে ওর শশুর বাড়ির লোকজন। এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নোমান বলেন, বিকেলে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চেকআপ করে দেখি শান্তা মৃত। মরদেহটির হাতে কয়েকটি ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। দেখে মনে হল রক্ত ক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান জানান, ঘটনাশুনে ভেদরগঞ্জ থানার ওসিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। আর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারি রিপোর্ট আসলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।