শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ আইন মেনে সড়ক চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি; এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শরীয়তপুরে জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই দিবস পালিত হয়েছে।
২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে জেলা সড়ক ও জনপদের বাস্তবায়নে একটি র্যালি বের হয়ে কোর্ট চত্বরে প্রদক্ষিন করে আবারো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন ও শরীয়তপুর বিআরটিএর আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান।
অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান বলেন, জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই দিবস ঘোষণা করে সরকার আসলে সামাজিক নিরাপত্তা আন্দোলনের সাথে সরকারের সংপৃক্ততা ঘোষণা করেছেন। এটি নিশ্চিত করার জন্য কে, কি কাজ করবে। অনেক গুলো প্রতিষ্ঠান এর সাথে জড়িত। তবে সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে জনগণের সচেতনতা। সেই সাথে পরিবহন সেক্টরে যারা আছেন, তাদের এই মুহুর্তে আরও বেশি সজাগ ও সচেতন হতে হবে। এ আমাদের সরকারি যে কর্মকর্তারা তাদের সরাসরি যে সেবা দিয়ে থাকেন। সেই সেবা প্রক্রিয়ায় কিছু ব্যত্বয় রয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স এর আবেদন করলে ৫/৬ মাস অথাবা ১ বছর লেগে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি পাচ্ছে না। আবার সড়কে যে গাড়িঘোড়া চলছে এগুলো রুট পারমিট পাচ্ছে না। আবার সড়কে যে গাড়িগুলো চলছে অনেক গাড়ির রুট পারমিট নাই। আবার হঠাৎ করে রুট পারমিট বন্ধ করে দিলে। এক সাথে জনগণের চাপ পরে যাবে। দেখা গেল তারা ঢাকা যেতে পারছে না। দেখা গেল আমার ক্রাস প্রোগ্রাম নিয়ে আমরা যদি আইন প্রয়োগ করতে যাই। তাহলে জনগণের কাছে মিস লিডিং ইনফরমেশন চলে যাবে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যেটা হলো। এতো জনগণ, বাস নেই কেন? মালিক সমিতিকে উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা গাড়ি নামাচ্ছেন ঠিক আছে। আমরা ওভার লুক করছি। আপনার দ্রুত রুট পারমিট নিতে পারেন। এভাবে বছরের পর বছরতো চলতে পারে না। এক সমিতি ১৫০ গাড়ি নামাচ্ছেন। আরেক সমিতি এতোটা নামাচ্ছে। যা ইচ্ছে তাই! খেয়াল খুশি মতো করে যাচ্ছেন। শরীয়তপুর থেকে যে রাস্তাটা ঢাকা গিয়েছে। এক ধরনের অনাচার তৈরি হয়েছে। এভাবে তো দীর্ঘ দিন চলতে পারেনা। এটা আপনাদের আজকে সিদ্ধান্তে যেতে হবে। আরটিএর যে কমিটি আছে আমি বলবো, আপনাদের আবার বসার প্রয়োজন। আপনাদের ১ মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ দিন হয়ে গেলেও এখনো আমি পায়নি। আসলে নিরাপদ সড়ক চাই দিবসে এগুলো হচ্ছে প্রতিষ্ঠানিক কাজ। এগুলো সঠিক ভাবে আমাদের সরকারি দপ্তর যদি করতে না পরি। তাহলে আমাদের হয়তো রাস্তার যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন হবে।
আমাদের যারা ড্রাইভার, হলেপার গাড়িতে কাজ করছেন। তারা যাতে এক সিফটে গাড়ি চালায়৷ সে যাতে রেস্ট নিতে পারে। প্রতিটি টার্মিনালে তাদের কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নতুন যে টার্মিনাল হচ্ছে তাদের বিশ্রাম নেয়ার জন্য জায়গা রাখা হচ্ছে। যাতে করে সে ঘুমাতে পারে রেস্ট নিয়ে যাতে সে গাড়িতে উঠতে পারে। এভাবে রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে তিনি প্রতিটি জিনিস খেয়াল রাখছেন। সেটি আমরা মাঠ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি ভংগিকে আামাদের মতো করে বাস্তবায়ন করতে পারছি কি-না। এটি আমাদের একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে আমাদের পুলিশ বিভাগ ও অন্যান্য যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আছে। যারা সরাসরি কাজ করছে। বিশেষ করে ট্রাফিকিংএর মাধ্যমে শত চেষ্টা করা হলেও পরিবহন মালিক, শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাস্তার শৃঙ্খলা আপনাদের উপর নির্ভর করে। আমি আশা করি শরীয়তপুরে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে আমাদের মালিক,পরিবহন শ্রমিক যারা আছেন। তারা সরকারি নির্দেশ মেনে চলবেন। এখানে স্কাউটিং আছেন, জনপ্রতিনিধিরা সহ সাংবাদিক ভাইয়েরা মিলে এটাকে একটি সামাজিক আন্দোলনে রুপ না দিতে পারি। ভয়াবহ অবস্থা কিন্তু! পরিসংখ্যানে এসেছে। কোভিড’যত মানুষ মারা না গেছে, তার চেয়ে বেশী মারা গেছে- সড়ক দুর্ঘটনায়। কোভিড এক আমরা সামাজিক আন্দোলন সচেতনতার মাধ্যমে আল্লাহর অশেষ রহমতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা যেহেতু ঠেকিয়ে দিলাম। তার চেয়ে বেশী ভাগ তো মারা গেছে- সড়কে। সেটা কি আপনারা ভেবে দেখেছেন কি না। আগে এক সময় কলেরা হতো। গ্রামের পর গ্রাম মারা যেত। আপনি একটি পরিসংখ্যান করে দেখেন ৫০ এর দশকে কলেরায় কত লোক মারা গেছে। আর গত ১০ বছরে আমাদের সড়কে কত মানুষ মারা গেছে। হিসেব করে দেখেন এখন বেশি মানুষ মারা যায়। সুতরাং এই সভ্যতার নামে আসেলে ব্যাসিক্যালি কলেরা চলে গেছে, কিন্তু চিকেনপক্স এর মতো কলেরা এখন গাড়ির মতো করে চলতেছে। মানুষকে মারার জন্য। আমরা মনে মনে ভাবছি, আমরা সভ্য হয়েছি। মনে মনে ভাবছি আমরা উন্নতি হয়েছি। আমাদের মৃত্যুর হার কিন্তু, অকাল মৃত্যু, অপ্রত্যাশিত মৃত্যু, অকারণ মৃত্যু, মানুষ হঠাৎ করে সড়ক দুর্ঘটনায় রাস্তায় মরে পরে থাকবে এটা কোন সভ্যতার মাপ কাঠি না। সড়কের বিশৃঙ্খলার জন্য। তাই করো উপর দায় চাপিয়ে নয়। সকলের সমন্নয়ে এটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সড়কটা নিরাপদ হয়। আমি আসা করি। আজকের এই দিন টাতে আপনারা এটাকে সামাজিক আন্দোলন হিসাবে। সরকারের আইন প্রতিপবন ও সকলকে সাথে নিয়ে নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে জন্য আমরা কাজ করবো।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রতিটি মানুষ তার নিজ নিজ থেকে নিরাপদ সড়ক আইন মেনে চললে দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে। চালকের উদ্দেশ্য করে বলেন,অতিরিক্ত গতিতে দূর্ঘটনা বেশি হয় তাই স্কুল, কলেজ, বাজার ও শহর এলাকায় গতি কমিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। স্কুল কলেজের পাঠ্যপুস্তকে নিরাপদ সড়ক কি ভাবে হবে? কি ভাবে সড়কে চলাচল করতে হবে? তা থাকলে দূর্ঘটনা রোধ করা যাবে তার সাথে প্রতিটি স্কুলে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ ব্যাবস্থা করে দেওয়া হোক।
এসময়ে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) গাজী শরিফুল হাসানের
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা,অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ তালুত,সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান নিরাপদ সড়ক চাই জেলা সভাপতি এডভোকেট মুরাদ হোসেন মুন্সী,শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার,মোটরযান পরিদর্শক মেহেদী হাসান।