রেজি: নং - আবেদিত ২০১৬খ্রিঃ, প্রতিষ্ঠাকাল: ১মার্চ ২০১৪                       বৃহস্পতিবার,  ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,  ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,  রাত ১২:১০

শরীয়তপুরে নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত

October 22, 2021 , 9:48 pm

জার্নাল প্রতিবেদনঃ গতিসীমা মেনে চলি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শরীয়তপুরে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শরীয়তপুরে জেলা প্রশাসন, বিআরটি এ মাদারিপুর প্লাস শরীয়তপুর ও সড়ক বিভাগের আয়োজনে ২২ অক্টোবর সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এসভার আয়োজন করা হয়।

এসময় জেলা প্রশাসক মো: পারভেজ হাসান,
বলেন, সরকারের যে আইন আছে। আমরা সেই আইন সঠিক ভাবে প্রয়োগ করছি কিনা? আইনপ্রয়োগকারীকে এর দায়িত্ব নিতে হবে। আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি গাড়ি একজন অদক্ষ চালকের কাছে করা দেয়? এটা নিশ্চয় সরকার দেয় নাই, বিআরটিএ দেয় নাই বা ডিসি অফিস থেকেও দেয় নাই।
দিয়েছেন একজন বাস মালিক। আমি জিজ্ঞেসা করেছিলাম এটা আপনি কেভাবে দেন। আপনি দেয়ার সময় যন্ত্রটি কার হাতে দিচ্ছেন? তার লাইসেন্স আছে কি-না? সে কোন ধরনের গাড়ি চালাতে পারে। দেখা গেলো, সে হালকা গাড়ির লাইসেন্স দিয়ে সে ১০টনি ট্রাক চালাচ্ছে। আবার দেখা গেছে এখনো ১৮ বছর হয়নি হেলপারি করতো,গাড়িতে উঠায়ে দিছে। সে গাড়ি চালানো শুরু করে দিছে। এই যে ভয়াবহ সংঙ্কট। এই সংঙ্কটকে স্বিকার করতে হবে আমাদের। স্বিকার না করলে, আপনি কিন্তু কাজ করতে পারবেন না। আমরা পথচারীরা যেখানে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হতে হয়। তা আমরা হচ্ছি না। আবার জেব্রা ক্রসিং-এ যে গাড়ি থামাতে হয়। তা আবার ড্রাইভাররা জানছেন না।
আবার অনেক ড্রাইভাররা মানুষ পার হচ্ছে গাড়ি গায়ের উপর দিয়ে তুলে দিচ্ছে।
তিনি সবার উদ্দেশ্য বলেন, ধরেন একজন মানুষ এসেছে বিদেশ থেকে। সে দেখে আসছে জেব্রা ক্রসিং এ যখন মানুষ নামে তখন চারিপাশের গাড়ি থেমে যায়। আমাদের কোন ভাই যদি অনেক বছর বিদেশে থেকে এই দেশে আসে। তখন সে-তো ঐ প্রাকটিসে আছে। রাস্তায় নেমে পড়েছে। আমাদের দেশের ড্রাইভাররা তো রাস্তায় মেশিনও দেখে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত ট্রাফিক হাত না উঠায় ততক্ষণ থামেনা।
অতএব আগে হচ্ছে এই আইন গুলো আমাদের সকল অথরাইজড গুলোকে জানানো। তারপর ছোটো-ছোটো ওয়ার্কশপ। সচেতনতা মূলক প্রচারণা করতে হবে। এখন স্কুল গুলোতে বাচ্চারা দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। স্কুলের বাচ্চাদেরকে নিয়ে কিভাবে রাস্তা পারাপার হতে হয় সেই শিক্ষা দিতে হবে। অনেক সময় দেখবেন মা-বাবারা রাস্তায় যে সকল ছোট-ছোট ভুল গুলো করে। বাচ্চারা কিন্তু তা ধরিয়ে দেয়।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ট্রেনডেনসি হয়ে গেছে আইন ভঙ্গ করার। আপনারা খেয়াল করবেন। বাংলাদেশের মানুষের একটি জেনারেল ট্রেনডেনসি হচ্ছে। যদি তুমি আইন বহিঃভূত কাজ করতে পারো! তহলে তুমি একটা কিছু হইছ। তার আগ পর্যন্ত তুমি কিছু না। আমি ডিসি সাহেব ফেরি ঘাটে গেলাম। আমার গাড়ি ১০টি গাড়ির পিছনে। আমার গাড়িটা গিয়ে যদি ১০ টা গাড়ির আগে উঠতে পারে। তা হলে বলবে, শরীয়তপুরের ডিসি সাহেব। কিছু একটা হইছে। আমি দেখেছি আমার এক ভাই ফেসবুকে সরকরের অনেক কিছুই লেখেন কিন্তু সে নিজে আইন অমান্য করেন। বাংলাদেশ ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির অভাব নাই। কিন্তু নিজের চেহারা আয়নায় কেউ তুলে ধরে না। আমাকে সে রিকোয়েস্ট করছে যে, আমাকে একটু আপনার পরিচয় দিয়ে ফেরীতে উঠিয়ে দেন না। না হলে ২ ঘন্টা বসে থাকতে হবে। প্রত্যেক জায়গায় এখন এরকম। তুমি ডিসি সাহেব কি করো! আমি কিছু করতে হলেতো আইনের বাহিরে গিয়ে আমাকে কিছু করতে হবে। আইনকে মানলে কারো কনো ক্ষমতা নেই। আইনকে ব্রেক করতে পারলেই বলবে উনি একজন ডিসি,বা এসপি। তার ছোট ভাই বলে পারছে। ডিসির চাচা বলে পারছে। এই ট্রেনডেনসিটা আমাদের একেবারে হাঁড়ে হাঁড়ে ঢুকে গেছে। যুগযুগ ধরে এগুলো ঢুকে আছে। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন। আমাদের দেশে আইন যে ভাংগতে পারবে সে হলো, হ্যাডাম ওয়ালা লোক। ঐ ট্রেনডেনসিটা এখনো পরেছে। আপনারা অনেকে জানেন আমি মাঝে মাঝেই গাড়ি ধরিতো রাস্তায়। আমি একবার একজনকে ধরে বললাম, গাড়ির কাগজ দেখাও। সে বলে এটা বাগেরহাটের মন্ত্রী সাহেবের গাড়ি। অথবা খুলনার বড় নেতার গাড়ি। শরীয়তপুরেও এখানে অনেক সাহেব আছেন। এই সাহেব গিরি বন্ধ করতে হবে। আমি ডিসি হিসেবে সাহেব হতে চাই না। আমি মানুষ হতে চাই। আইন মানতে হবে মনের থেকে হৃদয় থেকে। এই সাহেব গিরি ছেড়ে দিতে হবে। দেশের সংবিধান আছে। আইন আছে, মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে দায়িত্বটা যারা সমাজের উর্ধতন জায়গায় বসে আছেন, তাদের। সরকারের পরে সব চেয়ে দায়িত্ব বেশি হলো,মালিকের। আজকে দেখেন ইলিশের যে অভিযান চলছে। যাদেরকে আমরা ধরে এনে জেলে ভরছি। তারা তো দিন আনে দিন খায়। তাদেরকে আমি স্পটে পাচ্ছি। কিছু করার নাইতো। সত্যিকারে এই লোকগুলিকে ভরা মৌসুমে নৌকা কিনে দিয়ে, জাল কিনে দিয়ে, তৈল কিনে দিয়ে, তাদেরকে নামাইছে কারা? তাদেরকে তো আমি চিনিও না। চেনার সুযোগও নেই। কারণ তারা নামও বলবে না। তাদের সাথে জেলেদের চুক্তি আছে। ডিসি সাহেব, ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব ধরে নিয়ে গেলে তোমাদের আবার আমি জামিন করিয়ে দিব। তাই না। এখন ওদের পেটালেও তো নাম বলবে না। যারা মাছ ধরছে। তারা ১০ পার্সেন্ট টাকাও পায়না। তারা শুধু পারিশ্রমিক পায়। অথচ তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন শেষে ৫শ টাকা নিয়ে বাড়িতে যেতে হয়। মাছ নিয়ে যাচ্ছে মালিক মহাজন। সে তো ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে। তাই সরকারের পরে দায়িত্ব হচ্ছে এই মালিকদের। যারা ড্রাইভারের লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালাতে রাস্তায় নামাবেন।
ধরাধরি করলে আপনার মানসম্মন থাকবে না। তাই আমরা ধরাধরির কাজ করতে চাই না। আমরা চাই সমাজকে, জনগণকে সচেতন করে রাস্তায় একটি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা। এই জন্য এই সভা এই দিবস। আমরা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে,একজন কর্মকর্তা,কর্মচারী হিসেবে আমাদের আইন সম্মত যে দায়িত্ব আমরা তা করছি। কিন্তু আপনাদের যে ৪টা গ্রুপ, মালিক সমিতি গ্রুপ, যাত্রী, চালক ও পথচারী। তাদের সাবাইকে আমাদের সচেতন করার কাজ করতে হবে। মালিক সমিতি,চালক, যাত্রী,পথচারী সহ স্কুল শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। তাদেরকে সচেতনতা মোটিভেশনাল কিছু আলোচনা সভা আয়োজন করার আহবান রেখে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

Total View: 1023