শরীয়তপুরে বৃষ্টি হত্যার ৪০ দিন হয়ে গেলেও এখনো ধরা পড়েনি এজাহার ভূক্ত আসামী
খাদিজা আক্তার বৃষ্টি হত্যার ৪০ দিন হয়ে গেলেও এখোনো ধরা পড়েনি এজাহার ভূক্ত আসামী। শোকে কাতর খাদিজা আক্তার বৃষ্টির বাবা মা জানেনা আজ ১লা বৈশাখ। জানে শুধু আদরের মেয়ে বৃষ্টির মৃতুর ৪০ দিন। তাই নিজ বাড়িতে ছোট একটি উঠানে মিলাদও দোআ মাহফিলের আয়োজন করেছেন। বৃষ্টির বিয়েতে আয়োজন না হলেও মৃতুর ৪০দিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের পর এলাকাবাসী সহ আত্বীয় স্বজন এসে খেয়েছেন ভূনা খিচুরি। তাদের সবার দাবী কিশোরী বৃষ্টি হত্যাকারী সাথে জড়িতদের ধরে ন্যায্য বিচার হোক। আর কোন মেয়েকে যেন এ রকম যৌতুকের বলী না হতে হয়।
এদিকে ঘতকরা বৃষ্টিকে মেরে ফেলার পর থেকেই বৃষ্টির মা আজ ও পথ চেয়ে বসে থাকে আদরের বড় মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসবে সে আসায়। আজও তার কানে ভেসে আসে মেয়ের মা মা ডাকা দেয়ার শব্দ। কিশোরী মেয়ের কথা কোন ভাবেই ভূলতে পারছেনা বৃষ্টির বাবা, মা, ছোট ভাই বোন।
বৃৃষ্টির পরিবারের ক্ষোভের সাথে অভিযোগ করে বলেন, থানায় মামলা করতে গেলে ৫হাজার টাকা দিতে হয়েছে তাদের। মামলাতে ৮জনের নাম দেয়া হলেও তারা ৩জনের নাম বাদ দিয়েছে। কিন্তু আজ ৪০ দিন হয়ে গেলেও পুলিশ ১নং আসামী ছাড়া বাকী এজাহার ভূক্ত আসামীদের ধরার চেষ্টা করেছে না পুলিশ।
বৃষ্টির বাবা হাসেম বেপারী বলেন,আমি বিভিন্ন সময় তদন্ত কর্মকর্তা এমারত স্যারের কাছে আসামী এলাকায় দেখে ফোন দিয়ে জানালেও তিনি কোন ব্যাবস্থা নেয়নি। আসামী এলাকায় ঘোরাঘুড়ি করলেও ধরার ব্যপারে উদাসীন পুলিশ।
বিষয়টি আমি পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন স্যারকে জানালে তিনি, আমাদের শান্তনা দিয়ে আশ্বত করেন, মামলাটির তদন্তের জন্য অন্য কর্মকর্তার কাছে দিবে বলে জানান।
পুলিশ সুপারের কাছ থেকে এসে এজাহার ভূক্ত আসামীদের দেখে থানায় ফোন দিলে তদন্ত কর্মকর্তা এমারত হোসেন বলেন পুলিশ সুপার আসামী ধরতে মানা করে দিয়েছেন।
এ ঘটনায় হতাশাগ্রস্থ খাদিজা আক্তার বৃষ্টির পরিবার। মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে এখন হুমকীর মুখে বৃষ্টির পরিবার। প্রতি মুহুর্তে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ভাবে হুমকী দেয়া হচ্ছে তাদের। পরিবারটি কথা মানুষ ন্যায় বিচারক না এক মাত্র আল্লাহ ন্যায় বিচারক তাই আমরা তার কাছে বিচার চাই।
উল্লেখ্য,যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় নব বধূ খাদিজা আক্তার বৃষ্টিকে হত্যা করে। স্বামী রফিকুল ইসলাম (১৯)সহ তার পরিবারের লোকজন মিলে গত ৫মার্চ দুপুরে শ্বাসরোধে তাকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে রফিক। ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ধানুকা গ্রামে। হাসেম ব্যাপারীর মেয়ে খাদিজা আক্তার শরীয়তপুর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। একই গ্রামের রাজ্জাক মাতবরের ছেলে রফিকুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই রফিকের পরিবার যৌতুকের দুই লাখ টাকার জন্য খাদিজাকে চাপ দিতে থাকে। তার অটোরিকশা চালক বাবা ওই টাকা দিতে পারেননি। টাকা না পেয়ে তারা খাদিজার ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে খাদিজার মৃত্যু হয়।
শরীয়তপুরে বৃষ্টি হত্যার ৪০ দিন হয়ে গেলেও এখনো ধরা পড়েনি আসামী
April 16, 2017 , 1:33 pm