পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শরীয়তপুরের নড়িয়ার রাজনগরে যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার সাক্ষীর ছেলেকে প্রতিপক্ষের লোকজন রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবার, সহপাঠি ও স্বজনসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসছে। ঘটনার পর পুরো এলাকায় দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে । যে কোন মুহুর্তে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
নিহত নাহিদ জেলার নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের মালত কান্দি গ্রামের ভ্যান চালক আলী হোসেন মীর মালতের ছেলে এবং স্থানীয় মহিষখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেণীর ছাত্র। নাহিদের বাবা হতদরিদ্র হওয়ায় সে মাঝে মধ্যে ভ্যান চালিয়ে বাবাকে সহযোগিতা করতো ৷
নিহত নাহিদের চাচাতো ভাই রবিউল আউয়াল মীর মালত ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, রাজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন গাজী ও একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলী উজ্জামান মীর মালতের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।
এ বিরোধের জের একাধিকবার হামলা মামলা ও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সাবেক চেয়ারম্যান আলী উজ্জামান মীর মালতের সমর্থক স্থানীয় যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেন মাইকেল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়।
বর্তমানে মামলাটি সিআডিতে তদন্তাধিন আছে। ওই মামলার সাক্ষী আলী হোসেন মীর মালত গত কয়েক দিন আগে সি আই ডির কাছে সাক্ষী দেয়। এতে প্রতি পক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। নিহতের পরিবারে অভিযোগ এরই জের ধরে বুধবার সন্ধা ৭ টায় সাক্ষী আলী হোসেন মীর মালতের ছেলে মোঃ নাহিদ মীর মালত (১৫) উপজেলার মহিষ খোলা স্কুল মাঠে ভ্যানের উপর বসা ছিল।
হটাৎ করে ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাহিদকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থনীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ ঘটনায় এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
রাজনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যন আলী উজ্জমান মীর মালত বলেন, যুবলীগ নেতা মাইকেল খুনের ঘটনায় আলী হোসেন মীর মালত সি আই ডি তে সাক্ষী দেওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন তার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
রাজনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন গাজী বলেন, আমার কোন লোকজন ওই বাজারে যায় না। আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি। পূর্ব শত্রুতার কারণে আমাদের উপর মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। মাইকেল খুনের ঘটনা কে কেন্দ্র করে নাহিদকে মারপিট করেনি।
সন্ধ্যার পরে প্রতিদিন যুবকরা মহিষখোলা মাঠে আড্ডা দেয়। তাদের মধ্যে কোন বিরোধকে কেদ্র করে মারামারি হতে পারে। তবে কে বা কাহারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমার জানা নেই এবং ঘটনা স্থল রাজনগর ইউনিয়নে নয় এটি মোক্তারের চর ইউনিয়নের মধ্যে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, সন্ধ্যার পরে নাহিদ সহ ২/৩ জন যুবক মহিষ খোলা বাজারে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। হঠাৎ করে কয়েকজন লোক এসে নাহিদের উপর হামলা করে মারাতক আহত করে। পরে সে হাসপাতালে মারা যায়।