
শরীয়তপুরে প্রচণ্ড বেগে ঝড় আঘাত হেনেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে জেলার নড়িয়া উপজেলার চরাত্রা ইউনিয়নের খাস বাজার, খাসকান্দি ও চরাত্রা খাস কান্দি, নওপাড়া ইউনিয়নের তরু তাঁতির কান্দি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার পায়াতলি, সদর উপজেলার দক্ষিণ চরসন্দি, পশ্চিম চরসন্দি এলাকার উঠতি ফসল, আম গাছ এবং বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝড়ে এসব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা হবে বলে ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছে। এসব এলাকায় নিজাম মোল্যা, রাজ্জাক দেওয়ান, মিরাজুল খা, নুরু ঢালী, মালেক মাল, মিয়াজুল ঢালীর বাড়ি ঘরসহ প্রায় ২০০ বাড়ি ঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
ঝরে গাছের ডালা পরে বেগম আক্তার (৫০) নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ২০ জন। নিহত বেগম আক্তার ভেদরগঞ্জ উপজেলার ডিএম খালি ইউনিয়নের পায়াতলি গ্রামের জিয়াউর রহমান মাদবরের স্ত্রী।
ঝরে বেগমের নিহতর ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান ।
আহত নুরু রাড়ি (৫৫), মালেক মাল (৩৫), রাকিব মোল্যা (১২), হালিমা বেগম (৪০), রাজ্জাক দেওয়ান (৬০), তাসু বেগম (৬৫), জাহানারা বেগম (৫৫), হালিমা আক্তার (৩৫), ঝুমা আক্তার (১৪) নাম পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী কাছ থেকে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এই ঝড় শুরু হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা ঝড়ের তান্ডবে শরীয়তপুরের সদর উপজেলা, নড়িয়া উপজেলা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার সাতটি গ্রামের ঘরবাড়ি, উঠতি পাকা ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া আম গাছ ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলার চরাত্রা ইউনিয়নের জাহানারা বেগম জানান, তিনি গরিব মানুষ আজ ঝড়ে তার বসত ঘর, রান্না ঘর ভেঙ্গে গেছে । সাহায্য না পেলে খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে থাকতে হবে বলে জানান তিনি।
চরাত্রা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হিরো মুন্সি জানান, সকালে ঝরের তান্ডবে চরাত্রা ইউনিয়নের খাস বাজার, খাসকান্দি ও চরাত্রা খাস কান্দি গ্রামের প্রায় ১৫০টি বাড়ি ঘর ভেঙ্গে গেছে।
তিনি জানান, খাস কান্দি গ্রামের নুরু রাড়ি নামে একজনের ঘরের বাঘা বুকের ভিতর ডুকে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বগম আক্তার তার মেয়ের শশুর বাড়ি যাওয়ার পথে পায়াতলি এলাকার ভেদরগঞ্জ-সখিপুর সড়কে থাকা ঝরে গাছের ডালা ভেঙ্গে মাথার উপর পরলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। জানিয়েছেন নিহত বেগমের মেয়ের জামাই জান শরীফ।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, ঝরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নড়িয়ার চরাত্রা ও নাওডোবা ইউনিয়নে আমি এসেছি । এই দুইটি ইউনিয়নে প্রায় ১৫০ টির মত বাড়ি ঘর ঝরে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। আহত হয়েছে অনেকেই।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, ঝরে যাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে ও যারা আহত হয়েছেন তাদের চাল ও নগত টাকা দেওয়ার কথা বলেছি নড়িয়ার পিআইও কে। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সাহায্যর ব্যবস্থা করা হবে।