দেখে বোঝার কোন উপায় নেই, যেই জায়গাতেই ছিল ময়লা আবর্জনার স্তুপ সেখানেই আজ বইয়ের লাইব্রেরি। শরীয়তপুর সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই পুরো জায়গাটিকে বদলে দিয়েছেন এক নান্দনিক লাইব্রেরীতে। দেয়াল জুড়ে শোভা পেয়েছে বই, যে বইগুলো নিতে কোন টাকা খরচ করতে হবে না, যে কেউ এসে এখান থেকে বই নিয়ে যেতে পারবে আবার ফেরত দিয়ে যেতে পারবেন পড়া শেষ হলে। অনন্য এই উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে ভাষার মাস ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে মাথায় রেখে তাই এই লাইব্রেরীতে বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোন বই রাখা হবে না এবং এখানে যারা আসবে বা নিয়ে যাবে তাদের কোন রেজিস্ট্রার বা খাতা থাকবে না।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসার সামনে ছিলো ময়লা আবর্জনার স্তপ। সেই ময়লার স্তপকে পরিস্কার করে ভাষার মাস ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে মাথায় রেখে নান্দনিক এই দেয়ালে গড়ে তুলেছেন একুশে লাইব্রেরি। জ্ঞানকে পরিশীলিত, শাণিত এবং সমৃদ্ধ করতে ব্যতিক্রমি নান্দনিক এই বই লাইব্রেরি গড়ে তুলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই। এই উদ্যোগটি জনগণের সাথে প্রশাসনের সম্পর্ককে উন্নত করবে এবং জনসেবা পেতে মানুষের মনের মধ্যে যে বৃথা এটাকে দূর করবে সেই সাথে ভাষার মাসে ভাষাকে নতুন করে জানতে পারবে সাথে শরীয়তপুর জেলার মানুষজনকে পাঠকপ্রিয় করার এই উদ্যোগ। এই জেলায় এ ধরনের পাঠাগার এই প্রথম। অনন্য এই উদ্যোগটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ুক এটাই হলো এ উদ্যোগের মূল বিষয়।
ঘুরতে আসা কয়েক জন শিক্ষার্থীদেও সাথে কথা হয়, তারা জানান, বই পেয়ে খুবই আনন্দিত তারা। এর আগে কখনো এই ধরনের লাইব্রেরী দেখেনি।
তারা জানান, লাইব্রেরিগুলোও বেশির ভাগ সময় থাকে বাসাবাড়ি থেকে দূরে। সেখানে তাদের সব সময় যাওয়া হয় না। গেলেও থাকে ভির, এখানে এ ধরনের কোন জামেলা থাকবে না।
স্থানীয়রা মনে করেন, এটা একটা মহৎ উদ্যোগ, লাইব্রেরিগুলোও বেশির ভাগ সময় থাকে বাসাবাড়ি থেকে দূরে। লাইব্রেরিতে গিয়ে বই সংগ্রহ করে পড়া আরো বেশি দুরূহ। দূরত্বের কথা ভেবে আমাদের সেখানে সবসময় যাওয়া হয় না। এ ধরনের উন্মুক্ত লাইব্রেরি হওয়াতে সহজেই বই পড়া যাবে। প্রতিটি উপজেলায় এ ধরনের উদ্যোগ গড়ে উঠুক।
মুটিভেশন প্রেজেন্টার সোলাইমান সুখন বলেন, আমাদের চারপাশ সাজাতে হবে বইয়ের রাজ্যে। তারুণ্যের শক্তিকে আরো বেগবানের জন্য বইকে করতে হবে নিত্যসঙ্গী। এ লাইব্রেরির মাধ্যমে জনগণের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। যেখানে ছিলো ময়লার স্তপ সেখানে আজ বইয়ের লাইব্রেরী এটা সত্যিই দাগ কাটারমত।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই জানান, এই উদ্যোগটি আসলে জনগণের সাথে প্রশাসনের সম্পর্ককে উন্নত করবে এবং জনসেবা পেতে মানুষের মনের মধ্যে যে বৃথা এটাকে দূর করবে সেই সাথে ভাষার মাসে ভাষাকে নতুন করে জানতে পারবে সাথে শরীয়তপুর জেলার মানুষজনকে পাঠকপ্রিয় করার এই উদ্যোগ।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান জানান, শরীয়তপুর একুশের চেতনাকে ধারন করে এই ব্যতিক্রমি নান্দনিক উন্মুক্ত এই পাঠাগারের সৃষ্টি, এই একুশে লাইব্রেরীর মাধ্যমে শরীয়তপুরে নতুন একটি একুশের মাত্রা যোগ হলো।