শরীয়তপুর জার্নাল ডেস্কঃ শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজয়ী প্রার্থী ও পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ। শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ। জানা যায় সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বিজয়ী প্রার্থী আলি আজগর খানের সাথে পরাজিত প্রার্থী আঃ মতিন ছৈয়ালের সাথে সংঘর্ষ হয় । এসময়ে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ হয় ও দুই গ্রুপের ১৩ জন আহত হয়। স্থানীয়রা জানায়,শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউপিতে গত ১১ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জামাল হোসাইন। আর মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল হোসাইন জয় লাভ করেন। নির্বাচনে জামাল হোসেনকে সমর্থন করেন ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ টিপু। শনিবার সন্ধ্যায় মাহাবুব মোর্শেদ ও জামাল হোসাইনের সমর্থকরা তুলাসারের লতারবাগ ও উপরগাঁও গ্রামে হামলা করেন। গ্রাম দুটির ১২টি বসত ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। যাদের বাড়িতে হামলা করা হয়ে তারা সকলে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের সমর্থক। এর আগে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের দিন সকালে উপরগাঁও গ্রামে ১০টি ঘর ভাংচুর করা হয়। নির্বাচনের পরের দিন শুক্রবার গুড়িপাড়া,বাইশরশি ও দক্ষিন গোয়ালদি গ্রামে ৪০টি বসত ঘর ভাংচুর-লুটপাট করা হয়। লতাবাগ গ্রামের অঞ্জনা বেগম বলেন,আমার স্বামী ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে শিশু সন্তানদের নিয়ে একা থাকি। আনারস প্রতিকের প্রার্থীকে সমর্থন করেছিলাম। এ অপরাধে বিএনপি নেতা মাহাবুব মোর্শেদ টিপু ও আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান জামাল হোসাইনের লোকজন আমার ঘর ভাংচুর করেছে,টাকা ও স্বর্নালংকার লুটপাট করেছে। উপরগাঁও গ্রামের শারমিন আক্তার বলেন,শিশু সন্তানদের নিয়ে ঘরে ছিলাম। সন্ধ্যার পর হঠাৎ আমার বাড়িতে হামলা করা হয়। ঘরের বেরা কুপিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে,ঘরের মালামাল ভাংচুর করা হয়েছে। আমাদের অপরাধ আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ছিলাম। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন,নির্বাচনের আগের থেকেই আমার কর্মি-সমর্থকদের হামলা,মারধর করা হচ্ছিল। নির্বাচনের জিতে এখন বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি মিলে হামলা করে এখন আমার সমর্থকদের এলাকা ছারা করছেন। তাদের ভয়ে পাঁচটি গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত,পুরুষরা এলাকা ছারা। কেউ মামলা করারও সাহস পাচ্ছে না। জানতে চাইলে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ টিপু প্রথম আলোকে বলেন,আমার সমর্থকদের সাথে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। এ কারনে অনেকেই তার পক্ষে কাজ করছেন। জাহিদুলের সমর্থকরা আগে যাদের মারধর ও হামলা করেছে তারা এখন সুযোগ পেয়ে হামলা করছেন। তুলাসার ইউপির নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান জামাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন,আমার কোন সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা করছেন না। যে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে তা নিজেদের পারিবারিক ও এলাকার ঝামেলা। এর মধ্যে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আক্তার হোসেন বলেন,তুলাসারে বাড়ি-ঘর ভাংচুরের খবর পেয়েছি। সব পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। আর যাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয়েছে তাদের লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ না পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেব কি ভাবে?
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের আরো ১২টি ঘর ভাংচুর করেছে বিজয়ী চেয়ারম্যান
November 15, 2021 , 4:59 pm